বাংলাদেশে পাসপোর্ট করবেন যেভাবে
দেশের
নাগরিক হিসেবে পরিচয় দেওয়ার
জন্য সকলেরই পাসপোর্ট থাকা
উচিত। দেশের বাইরে যেতে হলে
আপনার পাসপোর্ট তো লাগবেই।
আমি অনেকদিন ধরেই করবো করবো
করেও পাসপোর্টটা করা হয়ে
উঠছিলো না। ছুটি পেলাম কিছুদিনের
আর তাই আলসেমি কাটিয়ে পাসপোর্ট
করার প্রসেস শুরু করে দিলাম।
এখন
পাসপোর্ট করার প্রক্রিয়া
আগের থেকে অনেক সহজ হয়েছে
অনলাইনে ফর্ম পূরণ করা যায়
বলে। সহজ হলেও পাসপোর্ট অফিসে
আমার বেশ দৌড়াদৌড়ি করতে হয়েছিলো।
প্রথমদিন বিশাল লাইনে দাড়িয়ে
শেষে গিয়ে আমাকে বলা হলো ফর্ম
দুই পৃষ্ঠায় প্রিন্ট করে আনার
জন্য। ফটোকপি দোকানে দৌড়ে
দুই পৃষ্ঠায় করে এনে দেখি
জাতীয় পরিচয়পত্রের অরিজিনাল
কপি আনা হয়নি। পরদিন ভোরে গিয়ে
আবার লাইন ধরলাম। দুপুরের
মধ্যে সব কাজ করে বাসায় এলাম।
অনেকের
পাসপোর্ট কোন ঝামেলা ছাড়াই
হয়ে যায় আবার আপনি যদি পোড়াকপালে
হোন আমার মত তাহলে অনেক ঝামেলায়
পড়তে পারেন। সমস্যা হলো
পাসপোর্টের নিয়মাবলীতে
নির্দেশনাগুলো সহজভাবে লেখা
থাকে না। পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে
সবাই বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে। আমি
অন্যদের সুবিধার জন্য পাসপোর্ট
আবেদনের প্রতিটি স্টেপের
সাথে কিছু টিপস ও করনীয় কাজগুলো
লিখছি। লেখাটি একটু বড় হবে।
তবে এই সব মেনে পাসপোর্ট করলে
আশা করি ভোগান্তি কিছুটা কম
হবে।
পাসপোর্টের
ফর্ম পূরণের আগে
অনলাইনে
পাসপোর্ট ফরম পূরণের আগে এই
কাজগুলো করে রাখবেন। তাহলে
ঝামেলা অনেক কমে যাবে।
১.
প্রথমেই
পাসপোর্ট ফি জমা দিবেন ব্যাংকে।
বর্তমানে ট্রাস্ট ব্যাংক,
ওয়ান
ব্যাংক,
ব্যাংক
এশিয়া,
প্রিমিয়ার
ব্যাংক,
ঢাকা
ব্যাংক,
সোনালী
ব্যাংক পাসপোর্ট ফী জমা নিয়ে
থাকে।
*
সাধারণ
পাসপোর্টের জন্য ফী ৩৪৫০ টাকা,
জরুরী
পাসপোর্টের জন্য ফী ৬৯০০ টাকা।
মূলত
ফী ৩০০০ টাকা,
ভ্যাট
হিসেবে ৪৫০ টাকা বেশি রাখে।
আর জরুরী পাসপোর্টের ক্ষেত্রে
ফী ৬০০০ টাকা,
ভ্যাট
হিসেবে ৯০০ টাকা বেশি রাখে।
ব্যাংকে ফী জমা দিলে আপনাকে
একটি রিসিপ্ট দিবে। সেটা
সাবধানে রাখবেন।
**ব্যাংকের
টাকা জমার রিসিপ্টের দুইটি
ফটোকপি করে রাখুন।
*মাঝে
মাঝে ব্যাংকের রিসিপ্টের
সিরিয়াল নাম্বারটি ভালোভাবে
দেখা যায়না। অস্পষ্ট লেখা
হলে ব্যাংকে রিসিপ্ট পাল্টিয়ে
দিতে বলবেন। সিরিয়াল নাম্বার
ফরম পূরণের সময় লাগবে।
২.
পাসপোর্ট
সাইজের ছবি লাগবে দুইটি। দুইটি
ছবি প্রয়োজন হলেও আরো দুই-তিনটি
বেশি ছবি রেডি করে রাখুন। সদ্য
তোলা পাসপোর্ট সাইজ ছবি হলে
ভালো হয়। স্টুডিও থেকে ছবি
তুলে দিবেন। স্ক্যান করে দিবেন
না। এতে সাইজে উলটাপালটা হয়।
*১৫
বছরের কমবয়স্কদের পাসপোর্টের
ক্ষেত্রে সন্তানের দুই কপি
ছবির সাথে পিতা ও মাতার দুই
কপি করে ছবি লাগবে।
৩.
জাতীয়
পরিচয়পত্র অথবা জম্ননিবন্ধণ
সার্টিফিকেট -
যেকোন
একটির দুইটি করে ফটোকপি করে
সেগুলো সত্যায়িত করুন।
৪.
আপনি
যদি সরকারী চাকুরী করেন তাহলে
অফিস থেকে NOC
আনতে
পারেন। NOC
থাকলে
আপনার পুলিশ ভেরিফিকেশন করা
হবে না এবং সাধারণ পাসপোর্টের
ফী-তে
জরুরী পাসপোর্ট পেয়ে যাবেন।
পাসপোর্ট
ফরম পূরণ
পাসপোর্টের
ফরম অনলাইনে পূরণ করা যায়।
আবার প্রিন্ট করে হাতে লিখেও
পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে জমা দেওয়া
যায়। তবে হাতে লিখা ফরম জমা
দিলে সেটা অফিসে অনলাইন করে
দেয় তারা। এজন্য সময় ও ভোগান্তি
বেশি হয়। এতে ভুল হওয়ার প্রচুর
সম্ভাবনা থাকে। তাই আমি বলবো
বাসায় যদি কম্পিউটার থাকে
তাহলে অনলাইনে ফরম পূরণ করতে।
যেভাবে
অনলাইনে ফরম পূরণ করবেন:
১.
প্রথমে
http://www.passport.gov.bd
এই
ওয়েবসাইটে যাবেন।
২.
প্রথম
পেইজের গাইডলাইনগুলো মনোযোগ
দিয়ে পড়ে নিচে “I
have read the above information and the relevant guidance notes.”
এর
ঘরে টিক দিবেন। তারপর "Continue
To Online Enrollment” বাটনে
চাপ দিয়ে পরবর্তী পেইজে যাবেন।
৩.
লক্ষ্য
করুন পেইজের উপরে MRP
RELATED INSTRUCTION লেখা
ট্যাবে ক্লিক করলে "Online
Application Guide” আসবে।
এটি ক্লিক করে ডাউনলোড করুন।
আপনি কিভাবে এই পাসপোর্ট ফরমটি
পূরণ করবেন তার বিস্তারিত এই
গাইডলাইনে সুন্দর করে লেখা
আছে ছবি দিয়ে। এটি পড়ে বুঝে
বুঝে ফরম ফিলআপ করতে থাকুন।
গাইডলাইন
দেখে আশা করি আপনি ফরম পূরণ
করতে পারবেন। তাই এ নিয়ে আর
বিস্তারিত লিখছি না। তবে ফরম
পূরণের সময়ের কিছু টিপস দিচ্ছি
নিচে:
আপনার
যদি NOC
থাকে
তাহলে Passport
Type : OFFICIAL সিলেক্ট
করুন।
বিবাহিত
(MARRIED/WIDOWED)
হয়ে
থাকলে Spouse
(পার্টনার)
এর
নাম Name,
Nationality ও
Profession
দিন।
Birth
ID Number / National ID Number (NID) যেকোন
একটি দিলেই হবে। বাকি ঘরটি
খালি রাখুন।
Height
ইঞ্চি
হিসেবে দিন। আপনি যদি ৫ ফুট
২ ইঞ্চি হোন তবে আপনার Height
হবে
৬২ ইঞ্চি। কেননা এক ফুট সমান
১২ ইঞ্চি। তখন Inches
এর
ঘরে লিখবেন ৬২। সেটা নিজে
থেকেই পাশের ঘরে সেন্টিমিটারে
কনভার্ট হয়ে যাবে। যা আসবে
ওভাবেই রেখে দিবেন।
যদি
সম্ভব হয় বর্তমান ও স্থায়ী
ঠিকানা (Present
and Permanent Adress) একই
দিবেন। এতে পুলিশ ভেরিফিকেশন
করতে একবার আসবে। দুইটি ঠিকানা
থাকলে দুই ঠিকানার বাসায়
দুইবার পুলিশ যাবে। তবে ফর্মে
ভুল ও মিথ্যা কোন তথ্য দিবেন
না।
পাসপোর্ট
ফরমের স্টেজ ১ এর পরের কিছু
টিপস
গাইডলাইন
দেখে নিশ্চয়ই আপনি স্টেজ -
১
পূরণ করে ফেলেছেন। আর বেশি
কাজ নেই। এবার ধৈর্য ধরে
বাকিগুলোও কমপ্লিট করুন।
পরের স্টেজের কিছু টিপস দেওয়া
হলো:
গাইডলাইনে
বলা আছে আপনার ইমেইলে একটি
এপ্লিকেশন আইডি ও পাসওয়ার্ড
দেওয়া হবে। কিন্তু এটি মাঝে
মাঝে আসে না। আমার কখনই আসেনি।
না এলে সমস্যা নেই। পরের
কাজগুলো করতে থাকুন।
এপ্লিকেশন
আইডি,
পাসওয়ার্ড
মেইলে না এলে SAVE
AND NEXT এ
ক্লিক করে স্টেজ -
২
ফিলআপ করা শুরু করে দিবেন।
আপনি
পাসপোর্ট রি-ইস্যুর
জন্য আবেদন করছেন না। তাই এ
সংক্রান্ত ঘরগুলো ফাকা রাখবেন
ফরমে।
ব্যাংকের
টাকা জমার রিসিপ্টের দেওয়া
সিরিয়াল নাম্বারটি ভালো করে
লিখবেন যেন কোন ভুল না হয়।
ব্যাংকে
টাকা জমার টাইপ Non-Online
সিলেক্ট
করুন যদি আপনি ব্যাংকে গিয়ে
টাকা জমা দিয়ে থাকেন। ফী এর
ঘরে ৩৪৫০ টাকা (সাধারণ
পাসপোর্টের জন্য)
অথবা
৬৯০০ টাকা (জরুরী
পাসপোর্টের জন্য)
লিখুন।
ব্যাংকের টাকা জমার রশিদের
সাথে সব মিলিয়ে নিন।
ফরম
পূরণের শেষের দিকেঃ
অভিনন্দন!
আপনি
ফরমের একদম শেষে চলে এসেছেন।
ফরম
সাবমিট করার পরে সেইভ করার
অপশন আসবে। ফরমটি সেইভ করে
রাখুন আপনার পিসি বা ল্যাপটপে।
এবার
সেই সেইভ করা ফরমটি প্রিন্ট
করুন ২ কপি। প্রিন্ট করার সময়
খেয়াল রাখবে অবশ্যই যেন পৃষ্ঠার
দুই পাতায় এপিঠ-ওপিঠ
করে প্রিন্ট করা হয়। প্রতি
ফরম দুই পেইজে প্রিন্ট হবার
কথা। দোকানে প্রিন্ট করালে
দোকানদারকে বলে রাখবেন।
ফরম
অবশ্যই কালার প্রিন্ট করাবেন।
প্রিন্ট
করা দুইটি ফরমে ছবি লাগানোর
স্থানে পাসপোর্ট সাইজ ছবি
আঠা দিয়ে লাগিয়ে দিন।
এবার
ফরম দুটি নিয়ে সত্যায়িত করতে
যান। ফরমের সাথে লাগানো ছবির
উপরে সিল দিয়ে সাইন নিতে হবে।
আর ফরমের ভেতরে শেষ পেইজে
সত্যায়নকারীর কিছু তথ্য লিখে
তার সাইন ও সিল নিতে হবে।
আপনার
National
ID বা
Birth
Certficate সত্যায়িত
করা না থাকলে অবশ্যই করিয়ে
নিবেন। এটাও দুই কপি লাগবে।
একই ব্যক্তির কাছ থেকে পাসপোর্ট
ফরম ও পরিচয়পত্র সত্যায়ন করলে
ভালো।
পাসপোর্ট
অফিসে হানা
এবার
সময় আপনার পাসপোর্ট অফিসে
হানা দেবার। অনলাইনে পাসপোর্ট
ফরম জমা দেওয়ার ১৫ কার্যদিবসের
মাঝে আপনাকে ফরম দুটি নিয়ে
পাসপোর্ট অফিসে জমা দিতে যেতে
হবে।
অনলাইনে
ফরম জমার ১৫ দিনের মধ্যে
পাসপোর্ট অফিসে না গেলে ঐ
ফরমটি বাতিল হয়ে যাবে। তখন
আবার নতুন করে ফরম ফিলআপ করতে
হবে।
১৫
দিনের মধ্যে অফিসে না গেলে
আপনার ব্যাংকের জমা দেওয়া
পাসপোর্ট ফী বাতিল হয়ে যাবে
না। টেনশনের কিছু নেই।
এলাকাভেদে
পাসপোর্ট অফিসের বিভিন্ন
শাখায় যেতে হতে পারে। আপনাকে
কোন পাসপোর্ট অফিসে যেতে হবে
তা ফরমে লেখা থাকবে অথবা ফরম
সাবমিটের পর ওয়েবসাইটে লেখা
থাকবে। লেখাগুলো ভালো করে
পড়বেন।
সকাল
৭-৮টার
দিকে পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে
লাইনে দাড়িয়ে যাবেন। অফিসে
প্রচুর ভিড় থাকে। ৯টায় অফিস
খুললে লাইন সামনে আগাবে ও
ভেতরে ঢুকতে দিবে। পাসপোর্ট
অফিসে কোন দালাল ধরবেন না।
অন্য কারো কাছে ফরম দিবেন না।
দালাল এলে এড়িয়ে যাবেন অথবা
অফিসে আর্মি মেম্বারদের কাছে
ধরিয়ে দিবেন। এখন দালাল ও ঘুষ
ছাড়াই ১০০%
পাসপোর্ট
করা যায়।
পাসপোর্ট
অফিসে সব কাগজ ঠিকমত নিয়ে
যাবেন। কোন কাগজ রেখে গেলে
বড় লাইন ধরে অনেক সময় নষ্ট
হবে,
কিন্তু
কাজের কাজ কিচ্ছু হবে না।
এজন্য আপনাকে একটি চেকলিস্ট
দিয়ে দিচ্ছি। মিলিয়ে দেখুন
সব সাথে নিয়েছেন কিনা:
১.
পূরণকৃত
দুই কপি পাসপোর্ট ফরম।
২.
ব্যাংকের
রিসিপ্টের মেইন কপি +
২টি
ফটোকপি। ব্যাংকের অরিজিনাল
রিসিপ্ট পাসপোর্টের দুইটি
ফরমের যেকোন একটির উপরে ডানদিকে
আঠা দিয়ে লাগিয়ে দিবেন। আঠা
উপরে বর্ডারে লাগাবেন। খেয়াল
রাখবেন রিসিপ্ট যাতে না ছিড়ে
যায় বা আঠা না খুলে যায়।
৩.
জাতীয়
পরিচয়পত্র অথবা জম্ননিবন্ধণ
সার্টিফিকেট -
যেকোন
একটির সত্যায়িত করা দুইটি
ফটোকপি।
৪.
জাতীয়
পরিচয়পত্র অথবা জম্ননিবন্ধণ
সার্টিফিকেট -
যেকোন
একটির অরিজিনাল কপি।
৫.
দুই
বা তিনটি এক্সট্রা পাসপোর্ট
সাইজ ছবি নিন। লাগতে পারে।
৬.
NOC থাকলে
সেটির মেইন কপি অবশ্যই নিবেন।
সাথে দুইটি ফটোকপিও নিবেন।
৭.
আপনার
বর্তমান বাসার বিদ্যুৎ,
গ্যাস
বা পানির বিলের একটি কপি নিয়ে
যান। প্রয়োজন হতেও পারে।
সবকিছু
নিয়ে পাসপোর্ট অফিসে গেলে
আপনি ভিতরে একটি বড় লাইন দেখতে
পাবেন। যাদের NOC
রয়েছে
এবং Official
বা
Diplomatic
Passport করাবেন
তারা নীচতলার ১০৩ নাম্বার
রুমে ভিন্ন একটি লাইন ধরবেন।
আর সাধারণ পাসপোর্টের লাইনটি
অনেক বড় হবে এবং ঘুরে ঘুরে
ভিতরের রুমে যাবে। নিচতলায়
ভিতরের রুমে গেলে একজন আপনার
পাসপোর্টের সব কাগজ চেক করে
দিয়ে দিবে। কোন সমস্যা থাকলে
ফরমের উপরে তা লিখে ঠিক করে
আনতে বলবে। তখন আবার নতুন করে
লাইন ধরতে হবে। তাই সব কাগজ
চেক করে নিয়ে যাবেন।
ফরম
চেক করা শেষ হলে আপনাকে উপরের
একটি রুমে ছবি তোলার জন্য
পাঠিয়ে দিবে।
**
ছবি
তোলার সুবিধার জন্য অবশ্যই
রঙ্গিন পোশাক পড়ে যাবেন।
সম্পূর্ন সাদা পোশাক পড়া
নিষেধ। সাদা পোশাক পড়ার জন্য
আপনাকে ফিরিয়েও দিতে পারে।
যিনি
ছবি তুলে দিবেন তিনি আপনাকে
কিছু প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে
পারে। বাড়ি কই,
নাম
কি,
কি
করেন -
এই
ধরনের প্রশ্ন। ঠিকমত উত্তর
দিবেন। প্রিন্টার থেকে একটি
রিসিপ্ট বের হবে। ঐটা নিয়ে
আসবেন। এটাই আপনার পাসপোর্ট
গ্রহণের রিসিপ্ট। এই রিসিপ্ট
হারিয়ে গেলে জিডি করে অনেক
ঝামেলা করে পাসপোর্ট পেতে
হবে। তাই রিসিপ্টের দুইটি
ফটোকপি করে রাখুন ও মোবাইলে
ছবি তুলে রাখুন।
পুলিশ
পুলিশ খেলা
পাসপোর্টের
একটি বিরক্তিকর স্টেপ হচ্ছে
পুলিশ ভেরিফিকেশন। আমি মনে
করি এই স্টেপটি উঠিয়ে দেওয়া
উচিত। ভেরিফিকেশনের নামে
টাকা খাওয়ার ধান্ধা ছাড়া এটি
আর কিছুই নয়।
পাসপোর্টের
ফরম জমা দেওয়ার পর ২ সপ্তাহের
মধ্যে পুলিশ আপনাকে কল দিবে।
কল দিয়ে আপনাকে কি কি কাগজ
লাগবে তা রেডি করে রাখতে বলবে।
সাধারণত এই কাগজগুলো দেখানোর
প্রয়োজন হয়:
*
বর্তমান
ও স্থায়ী ঠিকানার বিদ্যুৎ,
পানি
অথবা গ্যাস বিলের একটি করে
কপি।
*
আপনার
বাবা ও মায়ের NID
অথবা
অফিস আইডির ফটোকপি।
*
স্টুডেন্ট
হলে আপনার স্টুডেন্ট আইডি
কার্ড অথবা NID
কার্ড।
সবগুলো
কাগজ প্রয়োজন হতে পারে আবার
নাও পারে। পুলিশই আপনাকে বলে
দিবে কি কি লাগবে।
কাগজ
রেডি করে আপনি পুলিশকে কল
দিবেন কিংবা আর ২-৩
দিন পর পুলিশ নিজেই আবার আপনাকে
কল দিবে। পুলিশ আপনাকে কল করে
দুই সপ্তাহের মধ্যে না পেলে
পাসপোর্টের কাগজ রিজেক্ট করে
আবার অফিসে ফেরত পাঠিয়ে দিবে।
তাই এই কাজগুলো জলদি করার
চেষ্টা করবেন।
পরবর্তীতে
পুলিশ আপনার বাসায় আসবে অথবা
আপনাকে বাসার কাছেই কোথাও
যেতে বলবে। কাগজগুলো চেক করে
আপনাকে ফেরত দিবে অথবা কিছু
ফটোকপি রেখেও দিতে পারে।
পাসপোর্ট করাতে পুলিশকে কোন
টাকা দেওয়ার নিয়ম না থাকলেও
এক্ষেত্রে পুলিশেরা কিছু
টাকা চেয়ে বসতে পারে। আপনি
ঘুষ দিবেন কিনা দিবেন না সেটা
আপনার ব্যাপার। তবে না দিলে
অনেক ক্ষেত্রে সেই পুলিশ আপনার
পাসপোর্টের ভেরিফিকেশন বাতিল
করে দিতে পারে। সবাই সাধারণত
৩০০ থেকে ৫০০ টাকা দিয়ে থাকে।
পাসপোর্ট
ডেলিভারি
পাসপোর্টের
সব ক্যাচাল শেষ। এখন শুধু
অপেক্ষার পালা। পাসপোর্ট
রেডি হয়ে গেলে আপনার মোবাইলে
একটি এসএমএস আসবে। অনেক সময়ে
মেসেজ আসতে লেট হয়। আপনার
পাসপোর্টের বর্তমান অবস্থা
জানতে ওয়েবসাইট থেকে
(http://www.passport.gov.bd/OnlineStatus.aspx)
আপনার
পাসপোর্টের স্লিপে দেওয়া
আইডি ও জন্মতারিখ দিয়ে চেক
করতে পারবেন।
স্লিপ
নিয়ে পাসপোর্ট অফিসে যাবেন।
২য় তলায় পাসপোর্ট বিতরণ করা
হয়। ওখানে লাইনে দাড়িয়ে একটি
টোকেন নিবেন। ঐ কক্ষেই টোকেনের
নাম্বার ধরে ডাকা হবে। আপনার
টোকেন নাম্বার ডাকলে যেয়ে
পাসপোর্ট নিবেন। আপনার
আবেদনপত্রে পাসপোর্টের
নাম্বার,
সাইন,
ফোন
নাম্বার ও তারিখ লিখে দিতে
হবে। আবেদনপত্রটি তারা নিয়ে
নিবে।
এবার
পাসপোর্ট নিয়ে আপনি বাসায়
চলে যেতে পারেন। পাসপোর্টের
কয়েকটি ফটোকপি করে রাখতে
ভুলবেন না যেন!
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ পাসপোর্ট এর সকল তথ্য দেওয়ার জন্য। আমি আরেকটি ওয়েবসাইট পেয়েছি যেখানে খুব সুন্দর করে পাসপোর্ট চেক করা। যায় আপনার ওয়েবসাইটে কি পাসপোর্ট চেক করার কোন অপশন আছে?
ReplyDelete